নির্বাচিত লেখা

দাসপ্রথার বিরুদ্ধে রসুলাল্লাহর (সা.) সংগ্রাম

আল্লাহর রসুল (সা.) মানুষ কেনাবেচার দাসত্ব প্রথাকে নির্মূল করার জন্য তিনি আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। এই সংগ্রাম কেবল যে কাফেরদের বিরুদ্ধে তা নয়......

ফেরেশতাদের সাথে জঙ্গিবাদীদের কাল্পনিক কথোপকথন

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারী ১৭, ২০২১

যে পাঁচজন জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়া হয়েছে, তারা নাকি রায় শুনেও বিন্দুমাত্র বিচলিত হয়নি, বরং তাদেরকে হাস্যোজ্জ্বল থাকতে দেখা গেছে। মনে হয়েছে তারা খুব ফূর্তিতে আছে। কারণ তারা ধরেই নিয়েছে ইসলামের বিরাট উপকার হয়েছে তাদের দ্বারা। অনেক সওয়াব কামাই হয়েছে। এখন শুধু মরা বাকি। মরার সাথে সাথে তারা দেখবে জান্নাতুল ফেরদাউসের গেটে লাল গালিচা বিছিয়ে সারি সারি মালায়েক তাদেরকে উষ্ণ অভ্যর্থনা দেওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। সেই মরার কাজটাই যখন বিচারক সহজ করে দিলেন, তখন তো কথায় নেই। এখন ভালোয় ভালোয় ফাঁসির দড়িটা গলায় পরলেই হয়। 
ফেরেশতাদের সাথে জঙ্গিবাদীদের কাল্পনিক কথোপকথন

কিন্তু বাস্তবে কী হতে পারে? মৃত্যুর পর ফেরেশতাদের সাথে এই জঙ্গিবাদীদের কথোপকথন কেমন হতে পারে? আসুন একটি কাল্পনিক সংলাপে সম্ভাব্য চিত্রটা দেখে আসা যাক-


- ভাইজান, বেআদবী মাফ করবেন, আমি কি জান্নাতুল ফেরদাউসে যাচ্ছি?

- আপনি জান্নাতুল ফেরদাউসে যাচ্ছেন না।

- বলেন কি! নিজের জীবন দিয়া আসলাম ইসলামের জন্য, তারপরও যদি সবচেয়ে দামী জান্নাত না পাই তাইলে ব্যাপারটা কেমন হইল?

- ইসলামের জন্য জীবন দিয়েছেন? কোন যুদ্ধে? 

- ইয়ে মানে কোনো যুদ্ধে-টুদ্ধে না। এক নাস্তিককে কুপাইছি আর কি। তারপর আমার ফাঁসির রায় হইছে। 

- তাই নাকি? ওই নাস্তিক কি অনেক বড় অপরাধী ছিল? কী করেছিল সে?

- কী করা লাগবে আবার? নাস্তিক হইলেই তো কুপানো যায়, জানেন না আপনি?

- নাস্তিক হলেই কুপানো যায়? মরার পরে আবল তাবল বকা আরম্ভ করেছেন নাকি? 

- কী যে বলেন ভাইজান। আবল তাবল বকব কেন? আমাদের দেশ ছিল নব্বই পার্সেন্ট মুসলমানের দেশ, বুঝলেন? তো সেই দেশে কোনো লোক নাস্তিক হইব আর আমরা কি মাইনা নিব নাকি? আমাদের গায়ে কি ঈমানের আগুন নাই? দিছি কুপাইয়া, যা হয় কপালে।

- কপালে তো ভালো কিছু হবে বলে মনে হচ্ছে না। 

- মানে?

- মানে তেমন কিছু না। আপনাকে জাহান্নামে যাওয়া লাগবে এই আর কি।

- কীইইইইই???

- আপনি জানতেন না বিশ্বাসগত কারণে কাউকে আঘাত করার বিধান ইসলামে নাই? আপনাদেরকে যেই কোর’আন দেওয়া হয়েছিল, সেটা পড়েননি আপনি? ওখানে তো লেখা আছে, দীনে জোর-জবরদস্তি নাই। তারপরও বিশ্বাসগত কারণে কুপিয়ে মানুষকে মেরে ফেললেন? 

- কিন্তু আমাদের বড় বড় আল্লামা সাহেবও তো ফতোয়া দিয়েছিলেন নাস্তিকদের কতল করা ওয়াজিব। 

- তাই নাকি?

- উনাদের কথা শুনেই তো আমি হামলা করেছিলাম।

- ওই আল্লামারাও কি হামলা করেছিল আপনার সাথে?

- না না, উনারা হামলা করবে কেন? উনারা শুধু ফতোয়া দিয়েছিলেন।

- হা হা হা! আপনি তো ভালোই বেকুব লোক। কেউ ফতোয়া দিল আর আপনি বাস্তবায়ন করে ফেললেন?

- ইয়ে মানে, ও হ্যাঁ, ভাইজান আরেকটা কথা বলতে ভুলে গেছি। নাস্তিকরা কিন্তু আল্লাহ ও রসুলের নিন্দাও করত।

- তাহলে আপনার উচিত ছিল উত্তম যুক্তি দিয়ে তাদের সমালোচনার জবাব দেওয়া।

- কিন্তু তারা তো গালিও দিত। তারা গালি দিলে আমাদের তো কর্তব্য আছে, তাই না?

- অবশ্যই কর্তব্য আছে। আপনি তাদের নামে মামলা করতে পারতেন।

- মামলা তো করা হইত। কিন্তু লাভ হইত না। আল্লাহ, রসুল ও কুর’আনের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক গালাগালির ব্যাপারে শক্ত কোনো আইনই ছিল না। সরকারকে দাবি জানাইয়াও লাভ হইত না। সরকার শক্ত আইন পাস করত না।

- ও আচ্ছা, তার মানে আপনাদের দেশে আল্লাহর দীনই প্রতিষ্ঠিত ছিল না। তাহলে তো আপনার আগে উচিত ছিল আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠা করা। তখন দেখতেন নাস্তিকরা নিজে থেকেই সাবধান হয়ে যেত। আইনবিরোধী কথা বলতে পারত না। কিন্তু তা না করে আপনি জঙ্গিবাদী হামলা করলেন কেন? আইন হাতে তুলে নিলেন কেন? ইসলাম কি আপনাকে এসব নৈরাজ্যের শিক্ষা দিয়েছিল? বিশ্বনবীর জীবনী থেকে শিক্ষা নিতে পারলেন না আপনি?  

- ইয়ে মানে, ভাইজান, আমাকে বাঁচান! আমি তো তাইলে ভুল করে ফেলছি।

- যখন বেঁচে ছিলেন তখন তো মরতে চেয়েছেন, এখন মরার পর আবার বেঁচে উঠতে চাচ্ছেন কেন? এখনও তো কিছুই দেখলেন না এইপাড়ের। অনেক কিছুই দেখা বাকি আছে আপনার। কুপাকুপি দিয়াই শুরু করি, কী বলেন? হা হা হা।